ব্যাট হাতে দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকান পারভেজ হোসেন ইমন। তার ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহই পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাটারদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে টাইগারদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল। তবে পেসারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে জয় দিয়েই সিরিজ শুরু করেছে লিটন দাসের দল।
শনিবার (১৭ মে) শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ২৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রান করে লিটন দাসের দল। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত সময়ে ১৬৪ রানে গুঁটিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
এদিন তামিম ইকবালের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি হাঁকান পারভেজ ইমন। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৫৩ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন এই ওপেনার। যা বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তামিম ওমানের বিপক্ষে ৬৩ বলে ১০৩ রান করেছিলেন। ইমনের ব্যাট থেকে নয়টি ছক্কা ও পাঁচটি চারের শট এসেছে।
তানজিদ হাসান তামিম ৯ বলে ১০ রান করেন। অধিনায়ক লিটন দাসও ৮ বলে এক ছক্কায় ১১ রান করেন। হৃদয় ফিরে যান ১৫ বলে ২০ রান করে। জাকের আলি শুরু পেলেও ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি। আরব আমিরাতের হয়ে মোহাম্মদ জাওয়াদউল্লাহ ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন।
রান তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল স্বাগতিক আরব আমিরাত। প্রথম ৩ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলেছিল ৩৮ রান। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আভাস দেওয়া জুটি ভাঙেন পেসার হাসান মাহমুদ। মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ জোহাইব। অভিষেকে ৯ বলে ৯ রান করেন তিনি।
পরের ওভারে বাংলাদেশের স্বস্তি বাড়ান মুস্তাফিজুর রহমান। বল হাতে তুলে নিয়েই সাফল্য পেলেন। কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনে ব্যাট করতে নামা আলিশান শারাফুকে। এরপর তৃতীয় উইকেটে রাহুল চোপড়াকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে তুলেছিলেন ওয়াসিম হামিদ। রান তাড়ায় বেশ সাবলীল মনে হচ্ছিল আমিরাতকে। মাত্র ৩২ বলে ব্যক্তিগত ৫০ পূর্ণ করে ছুটছিলেন ওপেনার ওয়াসিম। যদিও আর ইনিংস বড় করতে পারেননি। তানজিম সাকিবের বলে শর্ট ফাইন লেগে মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে ধরা পড়েন। তাতে ভাঙে ৪২ বল স্থায়ী ৬২ রানের জুটি। ম্যাচ থেকে অনেকটা তখনই ছিটকে যায় স্বাগতিকরা।
মোহাম্মদ ওয়াসিমের পর রাহুল চোপড়াকেও ফেরান তরুণ পেসার। পরপর দুই ওভারে দুই সেট ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরলেন সাকিব। স্লোয়ার ডেলিভারিতে বড় শটের খোঁজে পয়েন্টে ধরা পড়েন রাহুল। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ২২ বলে ৩৫ রান করেন কিপার-ব্যাটসম্যান।
নিয়মিত বিরতিতে প্রতিপক্ষের উইকেট ভাঙতে পারলেও বেশ ছন্নছাড়া বোলিং করেছেন শেখ মেহেদী ও তানভীররা। নিজের কোটার শেষ ওভারে এসে উইকেটের দেখা পান তানভীর। ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ধ্রুভ পারাশার খেলেছেন ৭ বলে ৩ রানের ইনিংস।
তানভীরের পর জোড়া আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজ। আর তাতে খেলা শেষের আগেই অনেকটাই ছিটকে যায় স্বাগতিকরা। ইনিংসের শেষ ওভারে ৩৪ রানের সমীকরণ মেলাতে হতো জিততে হলে। আমিরাত উল্টো দুই উইকেট হারিয়ে করতে পারে কেবল ৬ রান। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় আশা জাগিয়েও হেরেছে স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ। এ ছাড়া দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন মুস্তাফিজ, তানজিম সাকি ও শেখ মেহেদী। আগামী ১৯ মে একই ভেন্যুতে মাঠে গড়াবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি।
খুলনা গেজেট/এমএম